আপডেট» জাহানারা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার <আমাদের সেবা সমূহ> • কম্পিউটার প্রশিক্ষণ • কম্পিউটার কম্পোজ • কম্পিউটার সাভিসিং • কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং • কম্পিউটার হার্ডওয়্যার • ছবি তোলা ও ছবি থেকে ছবি • ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ • সাইবার ক্যাফে • আনলাইন ভারতের ভিসা আবেদন • আনলাইন চাকরির আবেদন • সকল পরিক্ষার ফলাফল পাওয়া • আনলাইনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভতির আবেদন • এ ছাড়া সকল প্রকার কম্পিউটারের কাজ করা হয় • সার্বিক যোগাযোগঃ আলী রেজা রাজু ০১৭১৯৯২০৯৮০,রিফানুজ্জামান সোহাগ ০১৯১৫২৪৪৪১৮ # Email:» jc.com80@gmail.com

Tuesday, May 26, 2020

ইসলামে আমাদের প্রয়োজন না আমাদের প্রয়োজনে ইসলাম ?

একদিন উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) উবাই ইবনে কা’বকে (রাদিয়াল্লাহু আনহু) দেখলেন। উবাই কে? উবাই হলেন সেই ব্যক্তি, যার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যদি কুরআন শিখতে চাও, তাহলে এই চারজনের কাছ থেকে শেখো।” চারজনের লিস্টের একজন ছিলেন উবাই ইবনে কা’ব (রা:) [সহীহ বুখারীঃ ৩৮০৮]।
উবাই (রা:) মার্কেটে হেঁটে যাচ্ছেন, তাঁর পেছনে কিছু ছাত্র। উমর (রা:) এটা দেখা মাত্র একটা লাঠি দিয়ে উবাইকে (রা:) আঘাত করলেন। লাঠির আঘাতে উবাই চমকে উঠলেন। যেনো আকাশ থেকে পড়ছেন! বলে উঠলেন, “আমি কী করলাম...আমি কী করলাম?”
উমর (রা:) বললেন, “শুনো ও উবাই! এটা হলো একটা ফিতনা, যাকে ফলো করা হয় এবং যে ফলো করে। তোমার আত্মমর্যাদা আর তোমার ফলোয়ার্সদের তোমার উপর নির্ভরশীলতার ‘কাল্ট’ তৈরি করো না।”
সুবহানআল্লাহ! চিন্তা করুন, উবাইকে (রা:) উমর (রা:) বলছেন, ‘সেলিব্রিটি কাল্ট’ গড়ে তুলো না। উনি সেই উবাই (রা:), নবিজী সাহাবীদেরকে যার কাছ থেকে কুরআন শিখতে বলেছেন তাঁকে উমর (রা:) সতর্ক করে দিচ্ছেন। তাহলে আমি ইয়াসির ক্বাদি আর শায়খ ফুলানকে কী মনে হয়? আমি নিজেই ‘সেলিব্রিটি শায়খ’ সংস্কৃতির একজন বড়ো সমালোচক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমি নিজেও এরজন্য দায়ী। আল্লাহর কসম! আমি এটা ঘৃণা করি, আল্লাহ আমার সাক্ষী।
উবাইর (রা:) যদি দশজন শিক্ষার্থী-ফলোয়ার থাকাটা ‘ফিতনা’ হয়, তাহলে আমাদের জন্য ফেসবুকে, ইউটিউবে মিলিয়ন-মিলিয়ন ফলোয়ার থাকাটা কি ফিতনা নয়? এটা উবাইর (রাঃ:) জন্য যেমন ফিতনা, তেমনি আমাদের জন্যও ফিতনা।
আচ্ছা, উমর (রা:) কেনো উবাইর (রা:) ফলোয়ার থাকাটাকে ‘ফিতনা’ বললেন? কারণ হলো, ফলোয়াররা তো তাদের শায়েখকে খুব উঁচু চিন্তা করবে, তাঁর ইলম দেখে মুগ্ধ হবে, তাঁকে চিন্তা করতে করতে আরো উঁচুতে নিয়ে যাবে। শায়খকে কুরআনের সাথে লিংক করবে, হাদীসের সাথে লিংক করবে। ফলোয়াররা ভুলেই যাবে যে শায়খও ভুল করতে পারেন।
কিন্তু, হঠাৎ যদি সেই শায়খ বড়ো কোনো ভুল করেন, তাহলে ফলোয়াররা সেই ভুলকে ‘ভুল’ মনে করবে না। তারা বলবে, এতোবড় শায়খ, উনি তো কোনো ভুল করতে পারেন না!
শায়খ ভুল করবেন। কিন্তু, শায়খের ভুলকে মানুষ মনে করবে ইসলামের ভুল। শায়খ পা পিছলে পড়ে যেতে পারেন, তার পতনকে মানুষ মনে করবে ইসলামের পতন। কারণ কী? কারণ, ঐ শায়খকেই তারা ‘ইসলাম’ মনে করেছে।
এজন্য উমর (রা:) এই ট্রেন্ডকে শুরু থেকে কেটে দিতে চাইলেন। যাতে একজন মানুষকেই মানুষ ‘ইসলাম’ মনে করে না। খালিদের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) মতো সেনাপতি, যাকে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপাধি দিয়েছেন ‘সাইফুল্লাহ’ বা আল্লাহর তরবারি, সেই খালিদকে উমর (রা:) সেনাপতির পদ থেকে অপসারণ করেন। কারণ, মানুষের মধ্যে একধরণের ‘কাল্ট’ জন্ম নিচ্ছিলো যে, খালিদ (রা:) থাকলে আর যুদ্ধে পরাজয় হবে না। উমর (রা:) বুঝাতে চাইলেন যে, যুদ্ধে জয়-পরাজয় নির্ভর করছে আল্লাহর উপর, খালিদের (রা:) উপর না।
ইসলাম ধর্ম কোনো এক ব্যক্তি উপর নির্ভরশীল না। ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) সহীহ হাদীসের সংকলন করেন। তাঁর সংকলিত কিতাবের ফলে মুসলিম বিশ্ব সবচেয়ে বিশুদ্ধ হাদীসের কিতাব পেলো। অনেকেই বলেন, বুখারী না আসলে হয়তো ইসলাম ধর্মের হাদীসগুলো এতো সুন্দরভাবে সংকলিত হতো না।
কিন্তু, ইবনে তাইমিয়া (রাহিমাহুল্লাহ) কী বলছেন শুনুন...
“যদি ইমাম বুখারীর (রা:) জন্ম না হতো, তবুও আল্লাহ অন্য কাউকে দিয়ে ইসলামকে, নবীর হাদীসকে সংরক্ষণ করতেন।”
বুখারীর জন্ম না হলেও ইসলাম তাঁর নিজ গতিতে চলতো, আল্লাহ চালাতেন। তাহলে আমি-আপনি আর এমন কী? আমরা স্রেফ ইসলামের খেদমত করছি। আল্লাহর কসম, ইসলামের আমাদের প্রয়োজন নেই, আমাদের প্রয়োজন ইসলাম (Islam doesn’t need us, we need Islam)।
ফিতনার সময় আমাদেরকে সত্যিকারের আলেম-উলামাকে ফলো করতে হবে। সত্যিকাররে আলেম-উলামা কারা? যাদের ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি লাইক-ফলোয়ার আছে তারা? ওয়াল্লাহী! সত্যিকারের আলেম-উলামা হলেন তারাই, যাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে।
[লেখাটি ইয়াসির ক্বাদির Fitnah of Celebrity Scholar লেকচারের ভাবানুবাদ]
লিংক: https://youtu.be/H4X-vA1n8A8
অনুবাদ করেছেন: আরিফুল ইসলাম

No comments:

Post a Comment